তীরন্দাজ কবিতা
এই ঘ্রাণ তুমি পাও, আমিও তো পাই —
যৌথ কবরের মাঝে সম্পর্কের ছাই
ওড়ে আর উড়ে যায়, ধরতে কী পারি?
প্রিয় কুটুমের মতো
প্রিয় কুটুমের মতো, কোন কোনদিন দুঃখ আসে।
ঝরা পাতাদের মতো উড়ে আসে উদ্বাস্তু বাতাসে
যখন সংসারী আমি, গুছিয়ে নিয়েছি সবকিছু —
চাঁদ দেখে সাজি অন্ধ, করে থাকি মাথা আরও নিচু
বিছানায় শুয়ে শুয়ে করি ঘুমায়ে থাকার ভান,
শুনেও শুনিনা আর সৌরভময় ফুলের গান —
যখন নেমেছি জলে ভেসে থাকা পাতা ভালোবেসে
তখন চোরের মতো অতর্কিত দুঃখ, দুঃখ আসে
অস্বীকার করি যাই, মনে হয় এ জীবন ভালো
কোথাও জীবন আছে, বেদনার মতো জমকালো
সহমরণের মাঝে আমরা বেঁচেছি কতদিন —
চাইনি করতে শোধ আমাদের ব্যক্তিগত ঋণ
তোমার কান্নার সুরে মৃত পাখি গান ধরে ফের,
যেন সব ছাড়াছাড়ি, ছেড়ে চলে গেছে আমাদের
এ জীবন ধ্বসে পড়ে, ধ্বসে যাওয়া জীবনের পাশে —
প্রিয় কুটুমের মতো কোন কোনদিন দুঃখ আসে
দেশান্তর
শোনা যায় কতো নূপুরের ধ্বনি
চারপাশে নেই কেউ
মনে হয় রাগ মেঘমল্লার
নদীতে তুলেছে ঢেউ
কচুপাতা হাতে পথে নেমে আমি
কুড়িয়ে পেয়েছি ফল
দেখি কতো গাছ এসবের মাঝে
তুলে নেয় স্নানজল!
খালি পায়ে হাঁটি ঘাসেদের বুকে
বুক ভরে নিই শ্বাস
মাটি মাটি ঘ্রাণে মাতোয়ারা হলো
ঘরছাড়া বুনোহাঁস
যবনিকা নেই এই ভ্রমণের
ক্রমে হই পরিণত
ডুবসাঁতারের স্মৃতি সাথে হাঁটে
ছায়াবন্ধুর মতো
আর কিছু নয় এসব দৃশ্য
তুলে নেব আমি সুরে
যদি কোনদিন এই দেশ ছেড়ে
যেতে হয় বহুদূরে
ফুলেদের ঘ্রাণ
আমি একা হাঁটি আর তুমিও কি হাঁটো?
ঘাস নয়, মাটি নয় — মরে গেছে মাঠও
বিধবা মেঘের মতো আকাশের নীলে
নদী যেন হারায়েছে পলাতকা বিলে —
এসবের মাঝে আমি এক বালিহাঁস,
মাতালের ঘোলা চোখে দেখি চারপাশ
কমনীয় হয়ে আসে মরীচিকাগণ —
আধখানা চাঁদ আর বিগত জীবন
অনেক বছর পর, অনেক বছর
দেখা যায় অদেখারে চোখে নিয়ে ঘোর
সন্ধ্যা হাতে নিয়ে আমি, বসে আছি মাঠে
হেঁটে হেঁটে চলে যাই শ্মশানের ঘাটে —
থেমে যাবে বলে শুরু হয় অভিযান,
নাকে ভেসে আসে পোড়া ফুলেদের ঘ্রাণ
এই ঘ্রাণ তুমি পাও, আমিও তো পাই —
যৌথ কবরের মাঝে সম্পর্কের ছাই
ওড়ে আর উড়ে যায়, ধরতে কী পারি?
তুমি ছেড়ে চলে যাও, আমিও তো ছাড়ি…
Leave feedback about this